তুরস্কে ৪৫০ বছর আগের হাতে লেখা কুরআন শরিফের একটি কপি পাওয়া গেছে। দেশটির কারাপিনার জেলার কনিয়ায় অবস্থিত ঐতিহাসিক সুলতান সেলিম মসজিদে এটি পাওয়া গেছে।
ডেইলি সাবাহর খবরে বলা হয়, উসমানী সুলতান দ্বিতীয় সেলিম কর্তৃক উপহার দেওয়া এই কুরআন শরিফে ১০ পারা লেখা রয়েছে। সম্প্রতি এটি প্রকাশ্যে এসেছে।
কারাপিনার মুফতি ইউনুস আয়দিন আনাদোলু এজেন্সিকে জানান, হাতে লেখা কুরআন আবিষ্কারের ঘটনায় তারা অত্যন্ত আনন্দিত। যে মসজিদ থেকে পবিত্র কুরআনের কপিটি পাওয়া গেছে, ঐতিহাসিক মসজিদটি উসমানী খেলাফতের দ্বিতীয় সেলিম তৈরি করেছিলেন।
আমরা হাতে লেখা কুরআনের কপিটি পরীক্ষা করে দেখি, তাতে উসমানী সুলতান দ্বিতীয় সেলিম ও কারানপুরের নাম উল্লেখ আছে।
আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মুস্তাফা আসকার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করেন।
মুস্তাফা আসকার বলেছেন, ৪৫০ বছর আগে হাতে লেখা কুরআনের কপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ নথি। এর পর সুলতান সেলিম মসজিদে তা প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পবিত্র কুরআন ৩০ পারা হলেও এখানে শুধু ১০ পারা পাওয়া গেছে। কুরআন শরিফটি খুবই সুন্দরভাবে লেখা রয়েছে।
প্রচ্ছদের ভেতরে ‘তালিক’ লিপিতে তুর্কি ভাষায় লেখা বাক্যের অর্থ, ‘সুলতান সেলিম হান কর্তৃক কারাপিনার শহরে উপহার হিসেবে পাঠানোর জন্য হাতে লেখা।’
এক রাকাতে পুরো কোরআন পড়ল সিরিয়ান যুবক
নাম তার আবদুর রহমান আল নাবহান।দীর্ঘ সাত ঘণ্টায় সে মনোযোগসহ পবিত্র কোরআন খতম করেছে সে নামাজের এক রাকাতেই । নিজের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ করেছে।
পবিত্র কোরআনে ৩০টি পারা ও দুই শত ৪০টি রুকু রয়েছে। এর আয়াত সংখ্যা ছয় হাজার ৩৬। আর আবদুর রহমান এক রাকাতেই পবিত্র কোরআন খতম করেছে।
সিরিয়ান বংশোদ্ভূত এই তরুণ বর্তমানে তুরস্কের কোনিয়া শহরে বাস করে। সে সেখানকার স্থানীয় সেলজু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করছে।
২০ বছর বয়সী আবদুর রহমানের স্বপ্ন ছিল— রাতেরবেলা নামাজে পুরো কোরআন খতম করা। কারণ, ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান বিন আফফান (রা.) তাহাজ্জুদ নামাজের এক রাকাতে পুরো কোরআন শেষ করেছেন বলে হাদিসের বর্ণনায় এসেছে। মূলত বিখ্যাত সাহাবির এ ঘটনা তাকে অনুপ্রাণিত করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবের এক ভিডিওতে আবদুর রহমান এমনটা জানায়।
ভিডিওতে আবদুর রহমান আরও জানায়, এক রাকাতে কোরআন খতমের স্বপ্ন পূরণে— অবশ্য এর আগেও অনেক বার সে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে, তবে নিজ স্বপ্ন বাস্তবায়নে ছিল অনড়। তাই অনেক বারের ব্যর্থতা তাকে প্রস্তুত হতে সহায়তা করে। আর এক রাকাতে কোরআন খতম করে খ্যাতি পাওয়া বা ভাইরাল হওয়া তার উদ্দেশ্য নয়। বরং একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ তার উদ্দেশ্য। এমনটাই দাবি করেছে সে।
আবদুর রহমানের দাবি অনুযায়ী জানা যায়, রাত ১১টায় আবদুর অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণে নামাজে দাঁড়ায় সে। এরপর দীর্ঘ সাত ঘণ্টা পর ভোর ৬টায় তিনি কোরআন খতম করে নামাজ শেষ করে। সে এমন সময় নির্বাচন করেন যে, সময়ে ক্লান্তি ও পরিশ্রম কম হবে এবং পুরো কোরআন শেষ করা সম্ভব হবে। তাই শীতের রাতের সময়কে বেছে নেয়। কারণ, গ্রীষ্মকালে অল্প কাজেই ক্লান্তি ও ঘেমে যায়। তাছাড়া গ্রীষ্মের রাতের চেয়ে শীতের রাত দীর্ঘ হয়।
আবদুর রহমান আরও জানায়, এছাড়া নামাজের স্থান হিসেবে মসজিদকে বেছে নেয় সে। কারণ, ঘরে সময় নষ্টের সম্ভাবনা আছে। এছাড়াও পরিবারের কেউ তার মনোযোগ বিঘ্ন তৈরি করতে পারে। তবে নামাজ শেষ করে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ সবার জন্য দোয়া করে সে।