ভারতে হিজাব পরে কলেজে প্রবেশে বাধা দেয়ার জেরে চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন চাঁদনি নামে কর্নাটকের এক অধ্যাপিকা।
বৃহস্পতিবার রাজ্যটির জৈন পিইউ কলেজে এ ঘটনা ঘটে। খবর আনন্দবাজারের।
ওই অধ্যাপিকা জানান, গত তিন বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করছেন তিনি। হিজাব পরেই ক্লাস নিয়ে আসছেন নিয়মিত। আগে কোনোদিন কেউ হিজাবের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেননি, কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার কলেজের অধ্যক্ষ তাকে বলেন, ‘হিজাব অথবা অন্য কোনো ধর্মীয় চিহ্ন থাকে, এমন পোশাক পরে ক্লাস নেয়া যাবে না।’ এরপরই তিনি চাকরি থেকে ইস্তফার ঘোষণা দেন।
চাকরি থেকে পদত্যাগের ব্যাপারে অধ্যাপিকা চাঁদনি বলেন, ‘এই নতুন সিদ্ধান্ত আমার আত্মমর্যাদায় আঘাত করেছে। তাই পদত্যাগ করলাম।’ পদত্যাগ পত্রেও আত্মমর্যাদায় আঘাতের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তিনি।
হিজাব নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি লিখেন, ‘আপনাদের এই অগণতান্ত্রিক কাজের প্রতি আমি তীব্র নিন্দা জানাই।’
অন্যদিকে কলেজের অধ্যক্ষ কে টি মঞ্জুনাথ চাঁদনির সাথে ঘটে যাওয়া বিষটি অস্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, ভারতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হিজাব নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। এরইমধ্যে এই ইস্যুতে অধ্যাপিকা চাঁদনির পদত্যাগ পরিস্থিতিকে আরো বেশি উত্তপ্ত করে তুলল।
আরো পড়ুনঃ ইসলামে যেভাবে নারীদের পর্দা পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে
ইসলামে পর্দার বিধান: নারীর জীবন ও সম্মান রক্ষায় প্রকৃত সমাধান
ইসলাম বিশ্বজনীন এক চিরন্তন ও শাশ্বত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইসলামে পর্দার বিধান নারীর সম্মান, মর্যাদা ও সকল অধিকারের প্রকৃত স্বীকৃতি। এ বিধানেই রয়েছে তাদের সতীত্ব সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক কর্মসূচী। তাদের সম্মান, মর্যাদা ও সতীত্ব অক্ষুন্ন রাখতেই ইসলাম তাদের উপর আরোপ করেছে হিজাব বা পর্দা পালনের বিধান।
মূলত ‘হিজাব বা পর্দা’ নারীর সৌন্দর্য ও মর্যাদার প্রতীক। নারীর সতীত্ব ও ইজ্জত-আবরুর রক্ষাকবচ। নারী-পুরুষ উভয়ের চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার অতি সহজ ও কার্যকর উপায়।
আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে বলেনঃ
আর মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে(১) এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে(২); আর তারা তাদের সৌন্দর্য(৩) প্রদর্শন না করে তবে যা সাধারণত প্ৰকাশ হয়ে থাকে।(৪) আর তারা তাদের গলা ও বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে।(৫) আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীরা(৬), তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ(৭) এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক(৮) ছাড়া কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদচারণা না করে।(৯) হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে আস(১০), যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা নূরঃ আয়াত ৩১)