উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন মুসলিম জাহানের তৃতীয় খলিফা। তিনি ৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় কুরাইশ বংশে উমাইয়া গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। উসমান (রা.) এর উপনাম ছিল আবু আবদুল্লাহ, আবু আমর ও আবু লায়লা। তাঁর উপাধি ছিল গণি ও যুননুরাইন। গণি অর্থ “ধনী”। তিনি তখনকার আরবে সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। যুননুরাইন অর্থ দু’টি নূরের অধিকারী। হযরত উসমান (রা.) বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) এর দুই কন্যা রুকাইয়া ও উম্মে কুলসুমকে একজনের মৃত্যুর পর অন্যজনকে বিয়ে করেছিলেন বলে তাঁকে যুননুরাইন বলা হতো।
উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু এর কিছু বিখ্যাত উপদেশ বাণী
আমাদের অন্তর পাক-পবিত্র হলে আল্লাহর কালামে
আমাদের অন্তর কখনো পরিতৃপ্ত হবে না।
কেউ অন্তরে কিছু লুকাতে পারে না, আল্লাহ এটা তার চেহারায় অথবা তার কথায় প্রকাশ করে দেয়।
যে জিনিস পদাধিকারে অর্জন করা সম্ভব, তা কোরআন দিয়ে পাওয়া যাবে না।
উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার প্রতি কোনো গুরুত্ব দিতেন না। তিনি বলেন, দুনিয়ার মোহ অন্তরে অন্ধকার সৃষ্টি করে, আর আখেরাতের ভাবনা অন্তরে নুর তৈরি করে।
এটা তোমার শত্রুর জন্য যথেষ্ট যে, তোমার আনন্দের সময় সে কষ্ট পাবে।
ফিতনার সময় তিনি বলেন, আমি আমার নিজের ভুলের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং অন্যরা আমার ব্যাপারে যে ভুল করেছে তা ইতিমধ্যে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি।
প্রতিটি বিষয়কেই ছোট করে উপস্থাপন করা যায়, এবং প্রতিটি নিয়ামতকে তুচ্ছ সাব্যস্ত করা যায়, যারা অন্যের সমালোচনা এবং গীবত করে বেড়ায় তারাই এই দ্বীনকে ছোট এবং নেয়ামতকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে।তুমি যা দেখতে পছন্দ করো তা তোমাকে দেখাবে, এবং তুমি যা অপছন্দ করো তা তোমার দৃষ্টি থেকে লুকাবে, তারা উটপাখির মত দুষ্ট।
আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাযিয়াল্লাহু আনহু যখন উত্তর আফ্রিকার বিজয় সংবাদ নিয়ে আসেন তখন উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু তাকে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিতে বলেন। তাঁর বক্তব্য শেষ হলে ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন পিতা আর ভাইদের যোগ্যতা দেখে মেয়ে বিয়ে করো। আমি আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর এই ছেলের মধ্যে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চরিত্রের যে নমুনা দেখেছি তাঁর অন্য কোন ছেলের মধ্যে তা দেখিনি। আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাযিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন আসমা বিনতে আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহার সন্তান। এখানে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাযিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পিতামহ আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর মতো সাহসী নির্ভীক এবং সুবক্তা ছিলেন।
কেউ যদি কোন ভালো কাজ করে তাহলে আল্লাহ তা’আলা সেটা তার মধ্যে প্রতিফলিত করেন।
একজন ঈমানদারের অন্তরে পাঁচ রকমের ভয় কাজ করে
১. ঈমান ছিনিয়ে নেয়া হতে পারে এই ভয়;
২. ফেরেশতাগণ এমন কিছু লিখতে পারে যা তার উপর কেয়ামত দিবসে আরোপিত হবে।
৩. শয়তান তার নেক আমল বিনষ্ট করে দিতে পারে।
৪. মৃত্যুর ফেরেশতা কোন সর্তকতা ছাড়াই চলে আসতে পারে এবং দুনিয়া তাকে আখেরাত থেকে প্রতারিত ও বঞ্চিত করতে পারে।
উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি চারটি জিনিসের ইবাদতে মজা লাভ করেছি
১. আল্লাহ যা ফরজ করেছেন তা আমল করে।
২. আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থেকে।
৩. আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালো কাজে উৎসাহ দিয়ে।
৪. আল্লাহর শাস্তির ভয় যা মন্দ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে।