মানুষ যা পরিধান করে তাই হিজাব (পর্দা), এটি শুধু ধর্মীয় বিষয় নয়; বরং যার মধ্যে যতটুকু লজ্জা তার ততটুকু হিজাব প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সাইয়েদ আরশাদ মাদানী।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় ‘হিজাব নিয়ে অনেক কথাবার্তা চলছে আপনার মতামত কী’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাসূল সা:-এর বংশধর মাওলানা মাদানী বলেন, হিজাব তো পুরুষ-মহিলা সবাই করে। আপনি প্যান্ট-শার্ট পরেছেন, আমিও পরেছি। যার যা ইচ্ছা সে তাই পরিধান করে, এটাই তো হিজাব। যারা ধর্ম মানেন না তারাও তো পোশাক পরেন।
এটি শুধু ধর্মীয় বিষয় নয়।
‘হিজাবের প্রয়োজন কতটুকু’ এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যদিও ধর্ম হিজাব করতে বলে, তবে মানুষ হিসেবে যাদের লজ্জা-শরম আছে সবাই হিজাব করেন। যার মধ্যে লজ্জা-শরম যতটুকু তার জন্য হিজাবেরও প্রয়োজন ততটুকু। আর যে যতটুকু নির্লজ্জ, তার জন্য হিজাব ততটুকু নিষ্প্রয়োজন।
ইসলামে যেভাবে নারীদের হিজাব পরিধান এর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে
ইসলাম বিশ্বজনীন এক চিরন্তন ও শাশ্বত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইসলামে পর্দার বিধান নারীর সম্মান, মর্যাদা ও সকল অধিকারের প্রকৃত স্বীকৃতি। এ বিধানেই রয়েছে তাদের সতীত্ব সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক কর্মসূচী। তাদের সম্মান, মর্যাদা ও সতীত্ব অক্ষুন্ন রাখতেই ইসলাম তাদের উপর আরোপ করেছে হিজাব বা পর্দা পালনের বিধান।
মূলত ‘হিজাব বা পর্দা’ নারীর সৌন্দর্য ও মর্যাদার প্রতীক। নারীর সতীত্ব ও ইজ্জত-আবরুর রক্ষাকবচ। নারী-পুরুষ উভয়ের চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার অতি সহজ ও কার্যকর উপায়।
আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে বলেনঃ
وَ قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنٰتِ یَغۡضُضۡنَ مِنۡ اَبۡصَارِهِنَّ وَ یَحۡفَظۡنَ فُرُوۡجَهُنَّ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا مَا ظَهَرَ مِنۡهَا وَ لۡیَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰی جُیُوۡبِهِنَّ ۪ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا لِبُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اٰبَآئِهِنَّ اَوۡ اٰبَآءِ بُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآئِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآءِ بُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اِخۡوَانِهِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اِخۡوَانِهِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اَخَوٰتِهِنَّ اَوۡ نِسَآئِهِنَّ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُهُنَّ اَوِ التّٰبِعِیۡنَ غَیۡرِ اُولِی الۡاِرۡبَۃِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفۡلِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَظۡهَرُوۡا عَلٰی عَوۡرٰتِ النِّسَآءِ ۪ وَ لَا یَضۡرِبۡنَ بِاَرۡجُلِهِنَّ لِیُعۡلَمَ مَا یُخۡفِیۡنَ مِنۡ زِیۡنَتِهِنَّ ؕ وَ تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ جَمِیۡعًا اَیُّهَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
আর মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে(১) এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে(২); আর তারা তাদের সৌন্দর্য(৩) প্রদর্শন না করে তবে যা সাধারণত প্ৰকাশ হয়ে থাকে।(৪) আর তারা তাদের গলা ও বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখে।(৫) আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীরা(৬), তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ(৭) এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক(৮) ছাড়া কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদচারণা না করে।(৯) হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে আস(১০), যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা নূরঃ আয়াত ৩১)
আরো পড়ুনঃ ইসলামে পর্দার বিধান; নারীর জীবন ও সম্মান রক্ষায় প্রকৃত সমাধান