রোজা সম্পর্কিত কিছু কমন জিজ্ঞাসা। রমজান আসলেই আমাদের মাথায় কতগুলো প্রশ্ন দেখা দেয়, যেমন রোজা রেখে রক্ত দিতে পারবো কিনা, দাঁত ব্রাস করতে পারবো কিনা, ভুল করে খেয়ে ফেললে কী করতে হবে? ইনসুলিন নেয়া যাবে কিনা, এই ধরনের অনেক প্রশ্নই আমাদের মাথায় ঘুরপাক খায়। আমরা চেষ্টা করব রোজার শুরুতেই এসব বিষয়ে জেনে নিয়ে আমাদের রমজানকে সুন্দর করতে।
আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
ছেলে-মেয়েদের রোজা ফরজের বয়স কত?
ছেলে-মেয়েরা যখন বালেগ হবে তখন থেকেই তাদের উপর রোজা ফরজ। মেয়েরা তখনি বালেগা হয় যখন তাদের হায়েজ বা ঋতুস্রাব শুরু হয়। আর ছেলেদের কন্ঠস্বর পরিবর্তন হয়, দাঁড়ি বা গোফ গজিয়ে যায়, স্বপ্নদোষ বা বীর্যপাত হয় তখন থেকেই তাদের জন্য রোজা রাখা ফরজ। মনে রাখতে হবে নামায ও রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো নামায ৭ বছর বয়স থেকেই পড়া শুরু করতে হয়।
রোজা রেখে রক্ত নেওয়া বা দেওয়া যাবে কি?
রোজা রেখে রক্ত নেওয়া এবং দেওয়া দুটোই যায়েজ। তবে যদি রক্ত দেবার কারণে রোযা রাখতে কষ্ট হয়ে যায়, তাহলে রক্ত দেয়া মাকরূহ হবে। হাদীসে এসেছে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রেখে সিঙ্গা লাগিয়ে শরীর থেকে বিষাক্ত রক্ত বের করেছেন।
রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা যাবে কিনা?
আমরা সাধারণত ব্রাশের সঙ্গে পেস্ট, মাজন বা পাউডার ব্যবহার করে থাকি। রোজা অবস্থায় পেস্ট, গুল, মাজন বা কয়লা ইত্যাদি দিয়ে দাঁত পরিস্কার করা নিষিদ্ধ। কারণ এগুলো গলার ভেতরে চলে গেলে রোজাই নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি গলার ভেতরে না-ও যায়, তবুও রোজা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেমনটি মেসওয়াকের সঙ্গে ব্যবহার করা হয় না। তাই রোজাদারের জন্য উচিত হচ্ছে মেসওয়াক করা বা পেস্ট, মাজন, পাউডার, গুল ইত্যাদি ছাড়া ব্রাশ করা।
ভুল করে খেয়ে ফেললে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে?
হাদীসে বর্ণীত আছে, ভুলে পানাহার করলে রোজা ভঙ্গ হবে না তবে রোজার কথা সরণ হওয়ার সাথে সাথে মুখের খাবার ফেলে দিয়ে কুলি করে নিতে হবে।
রোজা অবস্থায় ইনহেলার নেয়া যাবে কিনা?
ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যায়। তাই রোজা অবস্থায় কেউ ইনহেলার ব্যবহার করে থাকলে, পরে রোজার কাজা আদায় করে দিতে হবে। তবে, মুখে স্প্রে করার পর না গিলে যদি থুতু দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়, তাহলে রোজা ভাঙবে না।
রোজা রেখে ইনসুলিন বা ইনজেকশন নেয়া যাবে কিনা?
ইসলামি আইন শাস্ত্রের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত অনুসারে, “প্রয়োজনের ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের টিকা বা ইনজেকশন তা শিরায়, চামড়ার নিচে, মাংসপেশিতে বা পেটেই দেওয়া হোক না কেন এতে রোজা ভেঙে যাবে না।” তবে যদি ইনজেকশনে ফুডস, সাপলিমেন্ট বা কোন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান থাকে তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে রমজানের রহমত, মাগফিরাত ও নাযাত দান করুন, আমীন।
আরও পড়ুনঃ রমজানে করণীয় ও বর্জনীয়