Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

    What's Hot

    ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরাইল, বন্ধ জেরুজালেমের রাস্তা

    হোলি উৎসবের কারণে ভারতের বহু মসজিদে পিছিয়ে গেল জুমার নামাজ

    রামগন্জের কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল

    Facebook Twitter Instagram
    • Home
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    Login
    The Holy Media
    • Home
    • ইসলামের আহকাম
      1. নামাযের হুকুম
      2. রোজা
      3. হজ
      4. যাকাতের বিধান
      5. পর্দার বিধান
      6. ইসলামে হালাম হারাম
      7. পবিত্রতা
      8. View All

      জামাতে নামাজ পড়ে পুরস্কার পেল ১৫ কিশোর

      January 30, 2023

      কুনুতে নাজেলা কি? দোয়া-বদদোয়ায় তা পড়ার বিধান ও পদ্ধতি

      December 24, 2021

      ফজরের জামাত চলাকালীন অবস্থায় সুন্নত পড়ার বিধান

      December 13, 2021

      প্রিয়নবী সা. যেভাবে কাটাতেন শাবান মাস

      February 3, 2025

      রোজা সম্পর্কিত আমাদের কিছু কমন জিজ্ঞাসা

      March 19, 2023

      তওবার অশ্রুতে সিক্ত হোক পবিত্র রমজানের শেষ রাতগুলো

      April 16, 2022

      মানবজাতিকে যে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে মাহে রমজান

      April 16, 2022

      আজ পবিত্র হজ

      June 15, 2024

      বিদায় হজের ভাষণ : সর্বজনীন মানবাধিকারের ইশতেহার

      June 27, 2023

      আল্লাহ হজের যে প্রতিদান দেবেন

      June 26, 2023

      হজ্জের পর হাজী সাহেবের করণীয়

      July 15, 2022

      ইরানে হিজাব ছাড়া বের হলেই ১০ বছর কারাদণ্ডের বিল পাস

      September 21, 2023

      আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ

      July 4, 2023

      হিজাব পরে কলেজে প্রবেশে বাধা, পদত্যাগ করলেন অধ্যাপিকা

      February 18, 2022

      মানুষ যা পরিধান করে তাই হিজাবঃ আরশাদ মাদানী

      February 16, 2022

      পানের সাথে জর্দা খাওয়া কি হারাম?

      August 29, 2023

      কি কি কারনে গোসল ফরজ হয়? ফরজ গোসলের সর্বোত্তম পদ্ধতি কি?

      January 2, 2022

      অজুর গুরুত্ব ও ফজিলত; অজু করার বিশুদ্ধ নিয়ম ও তারতিব

      December 31, 2021

      বীর্য লেগে কম্বল-তোশক নাপাক হলে যেভাবে পবিত্র করবেন

      December 23, 2021

      প্রিয়নবী সা. যেভাবে কাটাতেন শাবান মাস

      February 3, 2025

      আজ পবিত্র হজ

      June 15, 2024

      ইরানে হিজাব ছাড়া বের হলেই ১০ বছর কারাদণ্ডের বিল পাস

      September 21, 2023

      আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ

      July 4, 2023
    • খোলাফায়ে রাশেদীন
      1. হজরত আবু বকর রাঃ
      2. হজরত উমর রাঃ
      3. হজরত উসমান রাঃ
      4. হজরত আলী রাঃ
      5. View All

      আবু বকর রাঃ কেন উমর রাঃ এর দাড়ি ধরে ধমক দিয়েছিলেন?

      December 10, 2021

      ইসলামের প্রথম খলীফা আবু বকর রাঃ এর প্রথম ভাষণ ও আধুনিক রাষ্ট্রনায়কদের জন্য শিক্ষা

      December 9, 2021

      উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর কিছু বিখ্যাত উপদেশ বাণী

      December 21, 2021

      আবু বকর রাঃ এর ইনতেকালের পর আলী রাঃ এর আবেগময় ভাষণ

      December 20, 2021

      উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর কিছু বিখ্যাত উপদেশ বাণী

      December 21, 2021

      আবু বকর রাঃ এর ইনতেকালের পর আলী রাঃ এর আবেগময় ভাষণ

      December 20, 2021

      আবু বকর রাঃ কেন উমর রাঃ এর দাড়ি ধরে ধমক দিয়েছিলেন?

      December 10, 2021

      ইসলামের প্রথম খলীফা আবু বকর রাঃ এর প্রথম ভাষণ ও আধুনিক রাষ্ট্রনায়কদের জন্য শিক্ষা

      December 9, 2021
    • সীরাতে রাসূল সাঃ

      নবিজির প্রিয় খাবারের তালিকা

      December 8, 2023

      খাদ্যসংকট দূর করতে নবীজি সাঃ যে নির্দেশনা দিয়েছেন

      June 26, 2022
    • মুসলমানদের সোনালী শাসন
    • বর্ণাঢ্য জীবনী
    • ভিডিও

      শীগগিরি হবে গাজওয়াতুল হিন্দ, তছনছ হয়ে যাবে হিন্দুত্ববাদী সাম্রাজ্য

      February 16, 2025

      ঈসা আঃ এর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে সিরিয়ার দামেস্ক

      January 3, 2025

      দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার ইতিহাস । TheHolymedia

      February 24, 2023

      পদত্যাগ করলেন মসজিদুল হারামের ৩২ বছর দায়ীত্ব পালন করা খতিব শায়খ শুরাইম

      February 12, 2023

      পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ঙ্কর ১০টি ভূমিকম্প (ভিডিও)

      February 10, 2023
    The Holy Media
    Home » Blog » তাবলিগ জামাত নিয়ে বিভ্রান্তি ও নিষেধাজ্ঞা
    খোলা কলম

    তাবলিগ জামাত নিয়ে বিভ্রান্তি ও নিষেধাজ্ঞা

    ‘তাবলিগ জামাত’ নিয়ে বিভ্রান্তি ও নিষেধাজ্ঞা
    Share
    Facebook Twitter Telegram Pinterest Email

    গত ৬ ডিসেম্বর ভারতের দেওবন্দ-ভিত্তিক সুন্নি মুসলিমদের শত বছরের পুরনো ইসলাম প্রচারের সংগঠন তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে সতর্কতা জারি করেছে সৌদি আরব। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর জুমার নামাজের খুতবায় তাবলিগ জামাত সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করার জন্য ইমাম ও খতিবদের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির ইসলামবিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ আলে শায়খ।

    মন্ত্রী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘তাবলিগ জামাত বিপথগামী সংগঠন। তাদের তৎপরতা দ্বীনের মৌল কাঠামোর পরিপন্থী এবং এটি সন্ত্রাসবাদের অন্যতম দরজা।’ সৌদি মন্ত্রীর উত্থাপিত এই অভিযোগ গুরুতর। বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান এই সিদ্ধান্তে আহত হয়েছেন। তাবলিগ জামাত বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ধর্মীয় সংগঠন, যার সাথে রাজনীতি ও উগ্রবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাওহিদের স্বীকৃতি, ঈমান ও নেক আমলের দাওয়াত, ব্যক্তি চরিত্র সংশোধন, মানুষের সাথে সদাচরণ, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন ও পরকালীন জবাবদিহি তাবলিগ জামাতের মূল উদ্দেশ্য।

    তাবলিগ জামাত ১৯২৬ সালে মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি কর্তৃক উত্তর ভারতের মেওয়াতে দেওবন্দি আন্দোলনের একটি শাখা হিসেবে যাত্রা শুরু করে। সাধারণ মুসলিমদের মধ্যে ইসলামের নির্দেশনা পালনের উৎসাহ দেয়াই এ সংগঠনটির প্রধান ও মৌলিক কাজ বলে মনে করেন এই সংগঠনের নেতারা। তাই বিভিন্ন দেশের তাবলিগ জামাত-সমর্থকরা সৌদি সরকারের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিবেচনা করে অনেক আগে থেকেই সৌদি আরবে প্রকাশ্যে তাবলিগের কোনো কার্যক্রম ছিল না।

    ২০১৬ সালে সৌদি আরবের তৎকালীন গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল-আজিজ বিন আবদুল্লাহ বিন বাজ তাবলিগ জামাতের বিরুদ্ধে একটি ফতোয়া জারি করেন। তাদের অভিযোগ, ‘ফাজায়েলে আমল’ তাদের মূল গ্রন্থ। কুরআন ও সহি হাদিসের গ্রন্থের চেয়ে তারা এই গ্রন্থটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তাবলিগ জামাতের মুরব্বিরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরো কিছু দেশের সরকারও সৌদি আরবকে অনুসরণ করে তাবলিগকে নিষিদ্ধ করতে পারে।

    এ দিকে ভারতের প্রখ্যাত আলিম আল্লামা শায়খ সালমান হুসাইনি নদভি এ বিষয়ে সৌদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

    তিনি বলেন, বর্তমান সৌদি সরকার যে আন্তর্জাতিক ‘সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অ্যাজেন্ট’ হয়ে মুসলিম বিশ্বের বিরুদ্ধে কাজ করছে, এমন নির্দেশনায় সেটি আরো স্পষ্ট হলো। বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলিম মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভি বলেন, সৌদি সরকার শতবর্ষী একটি দ্বীনি আন্দোলনকে এভাবে একতরফা নিন্দা ও নিরুৎসাহিত করতে পারেন না। সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাবলিগ জামাতের বিরুদ্ধে প্রচারণা ও নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নুমানী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ: দারুল উলুম দেওবন্দের সদরুল মুদাররিসিন শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী রহ:-এর অন্যতম ছাত্র ছিলেন।

    তিনিই তাবলিগ জামাত প্রতিষ্ঠা করেন যার অধীনে বড়দের নিষ্ঠাপরায়ণ চেষ্টা ও মেহনত দ্বীনি ও আমলি ক্ষেত্রে উপকার বয়ে আনছে। শাখাগত মতভেদ সত্তে¡ও তাবলিগ জামাত নিজের মিশনে কাজ করে যাচ্ছে। প্রায় গোটা বিশ্বেই তাদের কাজ ছড়িয়ে আছে। এর সাথে যুক্ত সদস্য ও জামাতের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর শিরক, বিদআত ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। দারুল উলুম দেওবন্দ এর নিন্দা জানাচ্ছে। পাশাপাশি সৌদি সরকারের কাছে আবেদন করছে, তারা যেন নিজেদের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করেন এবং তাবলিগ জামাতের বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রচারণা থেকে বিরত থাকেন।

    তাবলিগি কাজ সম্পর্কে উপমহাদেশীয় আলিমদের সাথে কথা বলে মন্তব্য করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথোরিটি আল-হাইআতুল উলয়া-লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি, মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমির ও যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান হাফি।

    এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসলামের তাবলিগ তথা ঈমান আমলের দাওয়াতের কাজের নিন্দা করার আগে এর ভালোমন্দ সবদিক বিবেচনা করা উচিত। বর্তমান পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ ঈমান, ইসলাম ও ইহসানের দিকে ধাবিত হচ্ছে তাবলিগের মেহনতের ফলে। সৌদি আরবের আলিমদের উচিত তাবলিগি কাজ সম্পর্কে উপমহাদেশীয় আলিমদের সাথে কথা বলে মন্তব্য করা।

    আওলাদে রাসূল সা: হজরত মাওলানা মুহাম্মাদ রাবে হাসানী নদভী, মাওলানা সাইয়েদ আরশাদ মাদানী, মাওলানা মুফতি ত্বকী উসমানীসহ বিশ্বের সেরা আলিমদের সাথে পরামর্শ করতে হবে। এ মুহূর্তে আরব বিশ্বে আল্লামা সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী ও মাওলানা মানজুর নুমানী প্রভাবিত আলেমদেরকে পরিস্থিতি অনুপাতে সোচ্চার হতে হবে। দেওবন্দ মাদরাসা ও এর অনুসারী প্রতিষ্ঠানের মুরব্বিদের আরবের শাসক ও আলিমদের সাথে মতবিনিময় করতে হবে।’

    তিনি বলেন, সৌদি সরকারের ফরমান, অভিযোগ ও খুতবা প্রচারের বিষয়ে আমাদের মূল্যায়ন সৌদি বড় আলেমদের কাছে পৌঁছেছে। ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে শাসক পর্যায়েও পৌঁছে যাবে ইনশাআল্লাহ। প্রচলিত তাবলিগের কাজে তারা সমালোচনা বা সংশোধনী দিতে পারেন, কিন্তু একতরফা নিন্দা ও নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন না। অতীতের হুসামুল হারামাইন ফাতওয়ার দুঃখজনক ঘটনার মতো কোনো মহলের মিথ্যা প্রচারণা বা একতরফা অপবাদ শুনে তাবলিগি কাজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন না। এর ফলে সারাবিশ্বে এই কাজে নিষেধাজ্ঞা জারির প্রবণতা দেখা দিতে পারে। মুসলমানদের শত্রুরাই এতে খুশি ও লাভবান হবে।’

    সৌদি প্রজ্ঞাপনটির বক্তব্যে বাংলাদেশ পাক ভারত উপমহাদেশের আহলে হক উলামায়ে কেরাম ও সর্বস্তরের তাওহিদি জনতা খুবই মর্মাহত হয়েছেন। তারা ভেবে পাচ্ছেন না, এ কথা সৌদি আলেমরা কোথায় পেলেন যে, তাবলিগিরা কবরকে সেজদার স্থান বানায়? দুনিয়ার কোথাও এমন নজির নেই, হতে পারে না। ইনসাফের স্বার্থেই তাদের এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার অনুরোধ জানাই। হারামাইন শরিফাইনের দ্বীনি খেদমতের জিম্মাদারির মহান মর্যাদা তাদের আল্লাহ তায়ালা দান করেছেন। তাই দুনিয়ার মুসলমানদের কল্যাণকর দিকগুলো তাদের বিবেচনায় নিতে হবে।

    তাবলিগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং এর বিরোধিতা সমীচীন হবে না। কারণ বিশ্বে উম্মতের সাধারণ দ্বীনি ফিকির, ঈমানি ভাবনা, ন্যূনতম ঈমান আমলের চর্চা ও মুসলিম জীবনে শরিয়াসংশ্লিষ্টতা, ক্ষেত্রবিশেষে বেদ্বীনি ও বদদ্বীনি পরিবেশে মুসলিম পরিচয়টুকু ধরে রাখাসহ সারা বিশ্বে অমুলিমদের মাঝে ইসলাম প্রচারের জন্য এ শতাব্দীতে এই তাবলিগি কাজের সমপর্যায়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না।

    তাবলিগি জামাতকে ‘সন্ত্রাসী ও গোমরাহ’ সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ সাধারণ কোনো ঘটনা নয়। এটার পরিণতি হবে দূরপ্রসারী ও ভয়াবহ। এর জন্য সৌদি আরবকে বেছে নেয়া হয় যাতে অন্যান্য আরব ও মুসলিম দেশ অনুসরণ করতে পারে। ইসলামের উৎস ভ‚মিতে তাবলিগ জামাতকে নিষিদ্ধ করা অনেকের জন্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য কুশীলবরা মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠী ও উপগোষ্ঠী তৈরি করে এবং নিজেদের মত ও পথের বাইরের মানুষদেরকে বিদআতি, গোমরাহ ও কাফির ফতোয়া দিতে থাকে এবং উরারফব ধহফ জঁষব চড়ষরপু বাস্তবায়নে বিপুল অর্থ ব্যয় করে।

    এত চক্রান্ত করেও ব্রিটিশরা ভারত উপমহাদেশে থাকতে পারেনি। বিদায় নিতে হয়েছে। কিন্তু যে বিভ্রান্তি ও পারস্পরিক অবিশ্বাস তৈরি করা হয়েছিল তার রেশ রয়ে যাবে কিয়ামত পর্যন্ত। যখনই কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে নিষিদ্ধ বা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় তখন মুসলমানদের একাধিক গ্রুপ ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় ও উল্লাস প্রকাশ করে। এটা বিরাট ট্র্যাজেডি।

    যুক্তরাষ্ট্রে পবিত্র কুরআন ছেঁড়া ও পোড়ানো, ফ্রান্সে মহানবী সা:-এর ব্যঙ্গ কার্টুন অঙ্কন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে কটুক্তি, ধর্ম অবমাননা, তাবলিগ জামাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা, প্রভৃতি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সৌদি আরবে বহু খ্যাতনামা আলেম ওলামা কারাগারে বন্দী। তাদের মধ্যে শায়খ সালমান আল আউদাহ, কসিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক শায়খ ওমর আল মুকবিল, আয়েশা আল মুহাজিরি (৬৫), শায়খ আওয়াদ আল করনি, শায়খ আলী ওমর, শায়খ আবদুল আজিজ আল ফাউজান, শায়খ সালিহ আত-তালিব, শায়খ সফর আল হাওয়ালি, কিং সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আনাস আল মারজুয়ী প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

    The Middle East Eye (MEE) এর তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে শায়খ আউদাহ, শায়খ আল করনি, শায়খ ওমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা ছিল। কার্যকর হয়েছে কিনা নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়নি। সে দেশে মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা না থাকায় কেউ কিছু বলার বা লেখার সাহস পাচ্ছে না। ইসলামের ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক সরকারি পলিসির সমালোচনা করায় সৌদি আরবের বিভিন্ন কারাগারে প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে (Islamic Human Rights Commission, UK, 30 September, 2011, BBC, 2 September 2012)|

    চীনের উইঘুরদের জাতিগোষ্ঠীর বিখ্যাত ধর্মীয় স্কলার আইমুদ্দৌলা ওয়াইলিকে ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয়। চীনের অনুরোধে সৌদি কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেফতার ও কারাগারে নিক্ষেপ করে। মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আল ইখওয়ানুল মুসলিমুন ও ফিলিস্তিনের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন হামাসকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মিসরে হাসানুল বান্নাকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং মুফাসসিরে কুরআন সাঈদ কুতুবকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। শায়খ মুহাম্মদ আস সাবুনি, শায়খ আবুল ফাত্তাহ আবু গোদ্দাহ ও ড. ইউসুফ আল কারজাভী নিজ দেশে থাকতে পারেননি।

    আন্তর্জাতিক ঘটনাবলির বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইসলামের উত্থান ও জাগরণকে বন্ধ করার জন্য নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের প্রবক্তারা সুপরিকল্পিত নীলনকশা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এর বাস্তবায়নে তারা দেশে দেশে মুসলিম শাসকদের কাজে লাগাচ্ছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার প্রলোভনে। সৌদি আরব, মিসর, সিরিয়া, ইরাক, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও আরব আমিরাত তার প্রমাণ। তাবলিগ জামাতকে নিষিদ্ধ করার ঘটনা ওই নীলনকশার অংশ।

    সম্পূর্ণ দাওয়াতি কাজে নিবেদিত ড. জাকির নায়েক ও মাওলানা কলিম সিদ্দিকির দ্বীনি তৎপরতা ভারতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সহায় সম্পত্তি ফ্রিজ করা হয়েছে। খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারে কোনো বাধা নেই কিন্তু ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে গেলেই সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ তোলা হয়। বিভিন্ন অমুসলিম দেশে মিডিয়ার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ‘ইসলাম আতঙ্ক’ (Islamphobia) ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আরব শাসকরা ইসরাইলের সাথে কুটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করছেন এবং ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনগণকে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন।

    মহানবী সা:-এর শিক্ষা ও আদর্শের অনুসারীরা বিশেষত খুলাফায়ে রাশেদুন, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সুফি-দরবেশ ও মুবাল্লিগরা ধর্ম প্রচারের যে নজির স্থাপন করে তা সত্যিকার অর্থে অসাধারণ। তাদের অব্যাহত মেহনতের ফলে মরক্কো হতে চীনের প্রাচীর পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন জনপদ ইসলামের আলোকে উদ্ভাসিত হয়। সাম্য, ন্যায়পরায়ণতা ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে আদর্শসমাজ গড়ে ওঠে; নতুন সংস্কৃতি-সভ্যতার উন্মেষ ঘটে এবং একটি নতুন বিশ্ব অস্তিত্ব লাভ করে। মুবাল্লিগদের মানবীয় মূল্যবোধ, চারিত্রিক দৃঢ়তা ও সহমর্মিতাসুলভ গুণাবলি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে একে অপরের কাছে নিয়ে আসে।

    তাবলিগ তথা দ্বীন প্রচারের দায়িত্ব প্রতিটি যুগে প্রতিটি আদর্শবান মুসলমানের ওপর অর্পিত। আদর্শ যতটা উন্নত ও কল্যাণধর্মী হোক তা আপনা আপনি প্রসার লাভ করে না। অপর দিকে, প্রচারিত ও প্রসারিত আদর্শকে ধরে রাখার উদ্যোগ না নিলে সত্য বিকৃতি ঘটারও সমূহ আশঙ্কা থেকে যায়। আদর্শের ধারণ ও পুনরুজ্জীবনের জন্য তাবলিগি ও দাওয়াতি কাজ অপরিহার্য। ইসলাম প্রচারধর্মী দ্বীন। দাওয়াত ও তাবলিগ ইসলামের রক্ষাকবচ। বিশ্ববরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ: বলেন, ‘দাওয়াত ও তাবলিগ ইসলামের প্রাণশক্তি। এ চেতনাব্যঞ্জক কর্মতৎপরতা যদি মুসলিম সমাজে লোপ পায় তাহলে মানুষ পশুত্বের পর্যায়ে নেমে আসতে বাধ্য হবে।’

    দাওয়াত ও তাবলিগের ধারাবাহিকতায় যুক্ত হন হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর রহ:-এর বংশধর মাওলানা ইলিয়াছ রহ:। ১৯২৬ সালে তিনি যখন ভারতে তাবলিগি কার্যক্রম শুরু করেন তখন ঔপনিবেশিক রাজনৈতিক পারিপার্শ্বিকতায় ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ক্রমেই ধর্মবিমুখ হয়ে যাচ্ছিল। বিদেশী রাজশক্তির তোষণ ও ইংরেজ সংস্কৃতির লালনকে গৌরব মনে করা হতো। মেওয়াত থেকে তার এ মিশনের অভিযাত্রা। দুর্ধর্ষ তস্করদের জন্য মেওয়াতের কুখ্যাতি ছিল ভারতজুড়ে। লুণ্ঠন ও উৎপীড়নের মাধ্যমে গোটা এলাকায় তারা কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব।

    এমন কি মাঝে মধ্যে দিল্লিতে পর্যন্ত তারা হামলা চালিয়ে হত্যালীলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে দ্বিধা করত না। সম্রাট গিয়াসউদ্দীন বলবন (১২৬৬-৮৭ খ্রি.) রক্তপাত ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করেও সন্ত্রাসী ও ডাকাতদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে পারেননি। তাবলিগি কার্যক্রমের ফলে মেওয়াতের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এখন সৎ ও আল্লাহওয়ালা। পুরো অঞ্চলে বিরাজ করছে নিরবচ্ছিন্ন শান্তি। মাওলানা ইলিয়াছ রহ: উপলব্ধি করেন যে, ব্যক্তি চরিত্র সংশোধন করা না গেলে সামষ্টিক জীবন অপূর্ণ থেকে যাবে। ব্যক্তিসত্তায় ইখলাস, তাকওয়া ও পরকালীন জবাবদিহি সঞ্চার করা গেলে তা জীবনের সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যক্তি জীবনে যদি কেউ আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে তা হলে সমাজ ও রাষ্ট্র্রের যেকোনো গুরু দায়িত্ব তার ওপর নির্র্দ্বিধায় ন্যস্ত করা যায়।

    বর্তমানে উদ্ভূত অবস্থা ও পরিস্থিতির অবসান ঘটবে এবং ঘটাতে হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও দাওয়াতি, ইসলাহি, সামাজিক, রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। কামাল আতাতুর্কের সৃষ্ট নাস্তিক্যবাদী তুরস্কে এখন ইসলামের ঝাণ্ডা উড়ছে। বিরূপ আবহাওয়া ও বিপদ সঙ্কুল পথ কাফেলার অভিযাত্রা বন্ধ করতে পারবে না। দেড় হাজার বছর ধরে ইসলামকে বৈরী পরিস্থিতি ও প্রতিপক্ষের শক্তি ও দাপটের বিরুদ্ধে লড়াই করে এগিয়ে যেতে হয়েছে। আগামী দিনেও তা হবে। হতাশ হওয়া চলবে না। সাহস সঞ্চয় করতে হবে। নতুন সূর্যের উদয় সময়ের ব্যাপার মাত্র। সময়ের ব্যবধানে সৌদি আরব হতে পারে তাবলিগ জামাতের মূল কেন্দ্র। ইতিহাস তো তাই বলে।

    লেখক : ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
    অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক
    drkhalid09@gmail.com

    সূত্রঃ উপসম্পাদকীয়, নয়াদিগন্ত

    আরো পড়ুনঃ

    আবু বকর রাঃ এর ইনতেকালের পর আলী রাঃ এর আবেগময় ভাষণ

    ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন তাবলীগ জামাত দেওবন্দ মাদ্রাসা
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Email
    Previous Articleউসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর কিছু বিখ্যাত উপদেশ বাণী
    Next Article এক রাকাতে পুরো কোরআন পড়ল সিরিয়ান যুবক

    এই ধরনের আরো পোস্ট পড়ুন

    বাধা উপেক্ষা করে আল-আকসায় মুসুল্লিদের ঢল

    শীগগিরি হবে গাজওয়াতুল হিন্দ, তছনছ হয়ে যাবে হিন্দুত্ববাদী সাম্রাজ্য

    প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করবেন? অতিরিক্ত খেলে কী ক্ষতি হয়?

    বছর শেষে মুমিনের উদ্যোগ

    ১০ বছর আগে চুরি করা টাকা চিরকুট লিখে ফেরত দিলেন চোর

    মাত্র সাত মাসে হাফেজ হলো ৭ বছর বয়সী মাইদা

    Add A Comment

    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    হোলি উৎসবের কারণে ভারতের বহু মসজিদে পিছিয়ে গেল জুমার নামাজ

    আগামীকাল শুক্রবার (১৪ মার্চ) ভারতে হোলি উৎসব। আর এই উৎসবের কারণে দেশটির উত্তর প্রদেশ রাজ্যের…

    রামগন্জের কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল

    বাংলাদেশের সাহায্য চায় ভারতের সেভেন সিস্টার্স

    প্রকৃতির অপার বিস্ময় মৌমাছির জীবন চক্র যাতে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা

    রাজনীতিতে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব

    About Us
    About Us

    Fast-growing online news providing positive news & current affairs from Bangladesh and beyond. We publish News at different Perspective.

    Our Picks

    বাংলাদেশের সাহায্য চায় ভারতের সেভেন সিস্টার্স

    প্রকৃতির অপার বিস্ময় মৌমাছির জীবন চক্র যাতে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা

    রাজনীতিতে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব

    New Comments
      Facebook Twitter Instagram Pinterest YouTube
      • Home
      • ইসলামের আহকাম
      • ঐতিহাসিক মাদ্রাসা
      • পর্দার বিধান
      © 2025 Alll Rights Reserved TheholyMedia.

      Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

      Sign In or Register

      Welcome Back!

      Login to your account below.

      Lost password?