ঘনিষ্ঠ পুরুষ সঙ্গী ছাড়া দূরে ভ্রমণে বের হলে পরিবহন সেবা দেয়া হবে না আফগান নারীদের। রোববার (২৬ ডিসেম্বর)এমন নির্দেশনা জারি করেছে তালেবান পরিচালিত আফগান সরকার।
তালেবান কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানায়, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৭২ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে কোথাও যেতে হলে তাদের সাথে পুরুষ সঙ্গী থাকতে হবে। পুরুষ সঙ্গীকে পরিবারের সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক বলেও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
এছাড়াও গণপরিবহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নারীদের হিজাব পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যানবাহনের ভিতরে গান বাজানোও বন্ধ করতে জনগণকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আফগান নারী সাংবাদিকদের পরতে হবে হিজাব
আফগানিস্তানে নারীরা আর টিভি নাটকে অভিনয় করতে পারবেন না। আফগান সরকার কর্তৃক দেওয়া বিবৃতিতে টেলিভিশনে কী প্রচার করা যাবে, আর কী যাবে না এমন ৮টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, টিভিতে ইসলামী শরিয়া বিরোধী কোনো চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না। ধর্মকে হেয় করে এমন কোনো অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না।
পাশাপাশি ভিন্ন দেশের অপসংস্কৃতি প্রমোট করে এমন অনুষ্ঠান বাদ দিতে হবে। একইসঙ্গে নারী সংবাদকর্মী যারা আছেন তাদের সবসময় হিজাব পড়তে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য চলতি বছরের ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল নিয়ন্ত্রণ নেয়ার মধ্য দিয়ে পূনরায় আফগানিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে মুসলীম বাহীনি তালেবান। কট্টর ইসলামপন্থী তালেবান বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর, শরীয়তের আলোকে আফগান নারীদের সুরক্ষা, মানবাধিকার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করনের লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
যদিও পশ্চিমা কিছু রাষ্ট্রের তীব্র চাপের মুখে কৌশলগত কারনে নারীদের জন্য একে একে খুলে দেয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তালেবান সরকার বলছে, তারা নারী-শিক্ষার বিরোধী নয়। বরং নারীদের ইজ্জত আবরু হেফাজতের মধ্য দিয়েই তাদের শিক্ষার মান উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান সরকার।
গত শনিবার চীনা সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রথম দিকে নিরাপত্তার কারণেই নারীদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে রাজধানী কাবুলসহ বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় নারীদের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
দেশটির ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেন, করোনা মহামারির কারণে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই আফগানিস্তানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। আমরা নারী শিক্ষার বিষয়ে খুবই আগ্রহী। তারাও সমাজে সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আমরা ক্ষমতা নেওয়ার পর সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় সব উদ্যোগ নিতে কিছুটা সময় লাগছে।
আরো পড়ুনঃ ইসলামে যেভাবে নারীদের পর্দা পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে