পৃথিবীর বরকতময় ও স্মৃতিবিজড়িত ফিলিস্তিনের সুন্দর সুশোভিত প্রাচীনতম জেরুজালেম শহরে অবস্থিত মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ আল-আকসা। মুসলিম জাতির প্রথম কিবলা ও পৃথিবীর বুকে অবস্থিত সব জাতি-বর্ণের মুসলমানদের প্রাণস্পন্দন।
মুসলিম জাতীর এই পবিত্র স্থানটিকেই নিজেদের পবিত্র স্থান হিসেবে দাবি করে আসছে ইহুদি এবং খ্রিস্টানরাও। ১৯৬৭ সালে আরবদের সাথে যুদ্ধের পর মসজিদটি দখল করে নেয় ইসরাইলের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীরা। এরপর থেকে মসজিদটিতে ইবাদতের জন্য দখলদার বাহিনীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপরই তাকিয়ে থাকতে হয় ফিলিস্তিনের সাধারণ মুসল্লিদের।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও রমজানে নামাজ আদায়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয় দখলদার ইসরাইল।
ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা সত্ত্বেও শুক্রবার আল আকসা মসজিদে রমজানের প্রথম জুমায় মুসুল্লিদের ঢল নেমেছে। মুসলিম ভূখন্ড জেরুজালেমের ইসলামিক ওয়াকফের মহাপরিচালক শেখ আজ্জাম আল-খতিব তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
শেখ আজ্জাম আল-খতিব বলেন, আল আকসা মসজিদে শুক্রবার প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি জুমার নামাজে অংশ নিয়েছেন।
এদিন মসজিদের চারপাশে এবং জেরুজালেমের পুরাতন শহর জুড়ে ব্যাপকভাবে ইসরায়েলি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিলো। মুসল্লিদের আল আকসায় প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ নেয় ইসরায়েলি সন্ত্রাসীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তা সংস্থঅ আনাদোলুকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পশ্চিম তীরের হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আল আকসায় যেতে বাধা দিয়েছে। জেরুজালেমের আশেপাশের সামরিক চেকপয়েন্ট অতিক্রম করে তারা যেন যেতে না পারে সেজন্য ৩ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছিলো ইসলাইল।
এর আগে ইসরায়েলের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘোষণা করেছিলো, শুধুমাত্র ৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ, ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুরা আল আকসা মসজিদে প্রবেশ করতে পারবে। নামাজীদের পূর্ববর্তী নিরাপত্তা ছাড়পত্র নিতে হবে এবং নির্ধারিত ক্রসিংগুলোতে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হবে।
এতসব কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ সত্ত্বেও জেরুজালেম এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আরব অধ্যুষিত শহরগুলো থেকে ফিলিস্তিনিরা মসজিদে প্রবেশ করেছে। আল আকসার রক্ষী, স্কাউট এবং স্বেচ্ছাসেবক দলগুলো নামাজীদের সহায়তা করেছে।
খুতবা চলাকালীন আল আকসার জুমার নামাজের ইমাম মুহাম্মদ সেলিম মুহাম্মদ আলী ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মসজিদে পৌঁছানোর জন্য মুসল্লিদের দৃঢ় সংকল্পের প্রশংসা করেন। পবিত্র স্থানটি রক্ষা এবং ঘন ঘন নামাজ আদায়ের জন্য আরও প্রচেষ্টার আহ্বান জানান তিনি।
নামাজ শেষে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের জন্য গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি