বাংলাদেশের সাথে পাঙ্গা নিয়ে মহাবিপদে পড়েছে ভারতের মোদি সরকার। দেশটির অর্থনীতিতে নেমেছে মহাধস। ভারতীয় রুপীর রেকর্ড দরপতন হয়েছে যা দেশটির সামগ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে বাংলাদেশের কপাল খুললেও কপাল পুড়েছে ভারতের। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের এই অর্থনৈতিক সংকটের অন্যতম কারণ প্রতিবেশী বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের অবনতি। প্রশ্ন উঠেছে জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের নেয়া সিদ্ধান্তেরই খেসারত দিতে হচ্ছে মোদিকে?
বাংলাদেশের সঙ্গে এই মুহূর্তে ভারতের সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণে ভারতের অর্থনীতি একটি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে পর্যটক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারতের পর্যটন শিল্পে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশিদের ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে এনেছে ভারত। কারণ ভারতে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের মধ্যে প্রায় শীর্ষে থাকে বাংলাদেশ।
ভারতের পর্যটন খাতে প্রতিবছর প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার আয় করে। যার মধ্যে ৬ বিলিয়ন ডলার আসে শুধুমাত্র বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে। বাংলাদেশি পর্যটকরা ভারতের মোট বিদেশী পর্যটকদের ২২ শতাংশ। আর ভিসা ফি থেকেও ভারতের আয় হতো প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু, সে আয় এখন একেবারেই শূন্য। ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয় বলছে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলেন বাংলাদেশিরা।
বৈষম্যবিরোধি ছাত্রজনতার ৫ই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষিতে সাময়িক ভিসা প্রদান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। তার প্রভাব পড়ে স্বাস্থ্য খাতেও। কেয়ারেজ রেটিং রিপোর্ট অনুসারে ভারতের মোট চিকিৎসা পর্যটনে শতকরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ অবদান রাখে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র আমাদের বাংলাদেশ। এদিকে বাংলাদেশের পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে কার্যত ধুকছে ভারতের নিউমার্কেট চত্তর। মধ্য কলকাতার প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় ১০০টি হোটেল এবং ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার দোকান রয়েছে যেগুলো পুরোপুরিভাবে নির্ভর করে এই বাংলাদেশি পর্যটকদের উপরে।
পরিসংখ্যান বলছে বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে এই অঞ্চলের ব্যবসার প্রায় ৭০ শতাংশ ঘাটতি দেখা দিয়েছে