সময় মানুষের জীবনের অমূল্য সম্পদ। প্রতিটি মুহূর্ত মহান আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে মুমিনরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বছরের শেষ সময়ে এটি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে, কারণ এটি একদিকে অতীতের মূল্যায়ন করার এবং অন্যদিকে ভবিষ্যতের প্রস্তুতি গ্রহণ করার সুযোগ। একজন মুমিনের জীবনে আত্মমূল্যায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বছরের শেষ সময়ে নিজ নিজ আমলের পর্যালোচনা করা মুমিনের কাজ। বছর শেষে মুমিনের উদ্যোগ কি হবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো নিচে।
ইবাদতের হিসাব : সারা বছর নামাজ, রোজা, কোরআন তেলাওয়াত, দান-সদকাসহ অন্যান্য ইবাদত কতটুকু যথাযথভাবে পালন করা হয়েছে? এই হিসাব বের করা।
পাপের অনুশোচনা : ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় সারা বছর এমন কোনো কাজ কি করা হয়েছে, যে কাজ তাকে মহান আল্লাহর কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে? সেই হিসাব বের করা। যদি সে রকম কোনো কাজ করা হয়ে থাকে তাহলে তা থেকে তওবা করা এবং মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
সম্পর্কের মূল্যায়ন : আত্মীয়স্বজন, পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল? তাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয়েছে? তাদের কারও মনে কষ্ট দেওয়া হয়েছে কি না? এই হিসাব বের করা। অতঃপর কাউকে কোনো কষ্ট দিয়ে থাকলে তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং সম্পর্ককে আরও উন্নত করা।
নতুন বছরের আগমনে বেশি বেশি আমলের পরিকল্পনা করাও মুমিনের বৈশিষ্ট্য। এই বিষয়ে কার্যকরী কয়েকটি দিক উল্লেখ করা হলো। যেমন : বিশুদ্ধ চিত্তে মহান আল্লাহর জন্য ইবাদত করা, সময় মতো জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা, নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করা, মানুষের কল্যাণে কাজ করা, অসহায়দের সাহায্য করা, দাওয়াতি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা ইত্যাদি।
বছরের শেষে আমাদের অতীতের ভুলত্রুটি শুধরে নতুন বছরে আল্লাহর প্রতি আরও বেশি একনিষ্ঠ হওয়ার সংকল্প নিতে হবে। বছরের পরিবর্তন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সময় দ্রুত অতিক্রান্ত হচ্ছে। এই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের হিসাব আমাদের দিতে হবে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে দেখা যায়, একশ্রেণির মানুষ আতশবাজি পোড়ানো ও প্রচণ্ড শব্দে পটকা ফুটানোয় লিপ্ত হয়। এখানে দুটো বড় সমস্যা। এক হচ্ছে, এটা পালন করা অপসংস্কৃতি। এই উপলক্ষে পটকা ফুটিয়ে মানুষকে কষ্ট দেওয়া আরও জঘন্য গুনাহের কাজ। তাই এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা মুমিন-মুসলমানের বৈশিষ্ট্য। এই বিষয়ে বাইতুল মুকাররম মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক গত শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) জুমার বয়ানে বলেছেন, ‘থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন বিধর্মীদের সংস্কৃতি। তাই কোনো মুসলমান এটি উদযাপন করতে পারে না।’
আসুন, আমরা বছর শেষের এই সময়ে নিজেদের আমল ভালো করার এবং আল্লাহর কাছে আরও বেশি প্রিয় হওয়ার পথ খুঁজে নিই। মহান আল্লাহ আমাদের আমল কবুল করুন এবং পরবর্তী বছরকে কল্যাণময় করুন। আমিন।