স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে তা ফেরাতে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদ জব্দ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ঢাকা। দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত এবং লন্ডনে উপহার পাওয়া দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন করায় চাপের মুখে মন্ত্রিত্ব হারিয়েছে যুক্তরাজ্যের সাবেক দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে বলছে, লন্ডনে টিউলিপের যে কোটি কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে তা বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থে কেনা।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ৩৬ দিনের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগের আগে লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের বাড়ি ও ফ্লাটসহ বেশ কয়েকটি সম্পত্তির কথা প্রকাশ্যে আসে। এর মধ্যে একটি ফ্লাট তাকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন তার খালা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট একজন ব্যবসায়ী। তবে অভিযোগ ওঠে এই ফ্লাট প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থে কেনা। টিউলিপ মূলত দূর্নীতির অর্থের ভাগ হিসেবে এটি পেয়েছেন।
বাংলাদেশে রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিক, তার খালা ভারতে পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে, যা তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। লন্ডনে টিউলিপের মালিকানাধীন ৭ লাখ পাউন্ড মূল্যের ফ্ল্যাট সেই দুর্নীতির অর্থে কেনা হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে তদন্তে।
দুদকের ধারণা, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থের মাধ্যমে লন্ডনে বিলাসবহুল সম্পত্তি কেনা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট ছাড়াও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের উত্তর লন্ডনে সাড়ে ৬ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাটসহ ১৫ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ডের আরেকটি সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: মির্জা ফখরুল