অজু শুধুমাত্র পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমই নয়, বরং ফরজ ইবাদতের জন্য শর্ত। এই ওজুকে আল্লাহ তা’আলা ফরজ করেছেন। ইবাদত-বন্দেগিতে ওজুর রয়েছে অধ্যাধিক গুরুত্ব। অজু নামাজের চাবি। অজু ছাড়া নামাজ হয় না। তাই নামাজে দণ্ডায়মান হওয়ার আগে অজু করতে হয়। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জান্নাতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হচ্ছে অজু।’ (তিরমিজি, হাদিমঃ ৪) সুন্দরভাবে ওজু করা, ধারাবাহিকতা রক্ষা করাও ইবাদত। কিভাবে সুন্নতি কায়দায় ওজু করা যায় সে ব্যাপারে অনেক হাদিস ও ওলামায়ে কেরামগণ দিয়েছেন সুন্দর সুন্দর পন্থা।

অজুর ফরসমূহঃ

অজু করার সময় চারটি ফরজ রয়েছে। তিনটি ধৌত করা আর একটি মাসেহ করা। সেগুলো হলো—

এক. পূর্ণ মুখমণ্ডল বা চেহারা একবার ধৌত করা। (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৬)

মুখমণ্ডলের সীমানা হলো, দৈর্ঘ্যে চুলের উৎপাদনস্থল থেকে থুতনির নিচ পর্যন্ত, প্রস্থে এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত। (আল কামুসুল ফিকহি : ১/৩৭৩)

দুই. উভয় হাত কনুইসহ একবার ধৌত করা। (সুরা: মায়েদা, আয়াত: ৬, বুখারি, হাদিস : ১৮০)

তিন. মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা। (মুসলিম, হাদিস : ৪১২)

চার. উভয় পা টাখনুসহ একবার ধৌত করা। (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৬, বুখারি, হাদিস : ১৮০)

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করো এবং দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করো’ (সূরা মায়িদাহঃ ৬)।

অজু বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত

তিনটি শর্ত একই সঙ্গে বিদ্যমান না থাকলে অজু শুদ্ধ হবে না—

এক. যেসব অঙ্গ অজুর মধ্যে ধৌত করা আবশ্যক, সেসব অঙ্গের পুরো অংশে পানি পৌঁছতে হবে। (মুসলিম, হাদিস : ৩৫৯)

দুই. এমন কোনো বস্তু অজুর অঙ্গে থাকতে পারবে না, যেগুলো চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে প্রতিবন্ধক। যেমন—মোম, আঠা ইত্যাদি। (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৬৭)

তিন. অজু ভেঙে যায় এমন কোনো কিছু না-হওয়া। অজু করার সময় অজু ভেঙে যাওয়ার মতো কোনো কিছু সংঘটিত হলে অজু শুদ্ধ হবে না। পুনরায় করতে হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ১/১৮১)।

অজুর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা এত নেয়ামত বরাদ্দ রেখে দিয়েছেন, যা শুনলে অনেকে হয়তো আশ্চর্যান্বিত হয়ে যাবে। হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল সা: বলেছেন, ‘বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হলো অজু’ (মুসনাদে আহমাদ-৩, ৩৪০ পৃ.)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু থাকা সত্ত্বেও নতুন অজু করে সে ১০টি নেকি লাভ করে’ (মু.হা. অজুর ফাজায়েলঃ ২৫৩)।

ওজুর তারতিবসমূহ-

ক. ওজুতে নিয়্যাতে একটু উঁচু জায়গায় বসা যাতে ওজুর পানির ছিটা নিজের শরীরে না আসে।
খ. বিসমিল্লাহ তথা (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম) বলে ওজু শুরু করা।
গ. উভয় হাতে কবজি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা।
ঘ. মিসওয়াক করা। যদি মিসওয়াক না থাকে তবে মোটা কাপড় বা হাতের আঙ্গুল বা অন্য কিছুর দ্বারা উত্তমরূপে দাঁত পরিষ্কার করা।
ঙ. তিনবার কুলি করা। রোযা না থাকলে গড়গড়া করে কুলি করা।
চ. তিনবার নাকে পানি দেয়া। বাম হাতে কণিষ্ঠা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা নাক পরিষ্কার করা। (রোজাদার না হলে নাকের নরম অংশে পানি পৌঁছানো)
ছ. সমস্ত মুখ অর্থাৎ চুলের গোড়া হতে থুতনির নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হতে অন্য কানের লতি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা।
জ. দাড়ি ঘন হলে খিলাল করা।
ঝ. উভয় হাতের কনুইসহ তিন বার ধৌত করা। প্রথমে ডান তারপর বাম হাত। এসম উভয় হাতের আঙ্গুল খিলাল করা।
ঞ. সম্পূর্ণ মাথা একবার মাসেহ করা।
ট. কান মাসেহ করা। অর্থাৎ শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে কানের ভিতর এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে কানের বাহির অংশ মাসেহ করা
ঠ. ঘাড় বা গর্দান হাতের আঙ্গুলের পিঠ দিয়ে মাসেহ করা। কান ও গর্দান মাসেহের ক্ষেত্রে নতুন করে পানি নেয়ার দরকার নেই। মাথা মাসেহ করার পানি দিয়ে করলেই চলবে।
ড. উভয় পায়ের টাখনুসহ তিনবার ধৌত করা। প্রথমে ডান পা এবং পরে বাম পা ধৌত করা। পায়েল আঙ্গুলি খিলাল করার ক্ষেত্রে ডান পায়ের কণিষ্ঠা আঙ্গুল হতে শুরু করে বাম পায়ের কনিষ্ঠাঙ্গুলিতে এসে শেষ করা এবং বাম হাতের কণিষ্ঠাঙ্গুলি দিয়ে খিলাল করা।

অজুর সুন্নতসমূহ

১. নিয়্যাত করা, ২. বিসমিল্লাহ বলা, ৩. ডান থেকে শুরু করা, ৪. কবজিসহ উভয় হাত তিন বার ধৌত করা, ৫. মিসওয়াক করা, ৬. তিনবার কুলি করা, ৭. তিন বার নাকে পানি দেয়া, (নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌছানো) ৮. সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা, ৯. প্রত্যেক অঙ্গকে তিনবার করে ধৌত করা, ১০. দুই কান মাসেহ করা, ১১. উভয় হাত এবং পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা, ১২. ধারবাহিকভাবে ওজু করা, ১৩. এক অঙ্গ শুকানোর পূর্বেই পরবর্তী অঙ্গ ধৌত করা। এগুলো ওজুর করার সুন্নাত।

অজুর ফজিলত

অজুর বরকতে বান্দার অতীত জীবনের গোনাহ মাফ হয়ে যায়। হজরত আমর ইবনে আবাসা রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আমি একদিন প্রশ্ন করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! অজুর ফায়দা কী? তিনি বলেন, ‘যখন তুমি অজু করবে ও দুই হাতের কবজি পরিষ্কার করে ধৌত করবে, তখন গোনাহসমূহ আঙুলের অগ্রভাগ ও নখ দিয়ে বের হইে নাকের ছিদ্র পরিষ্কার করবে, মুখ ও হস্তদ্বয় কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে, মাথা মাসেহ করবে ও উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করবে, তখন তুমি যেন তোমার গোনাহগুলোকে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিলে। এরপর যখন তুমি তোমার চেহারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জমিনে রাখবে, তখন তুমি এমনভাবে গোনাহ থেকে নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তোমার মা তোমাকে জন্ম দিয়েছিল’ (নাসায়ি : ১৪৭)।

অজুকারী ব্যক্তি হাশরের ময়দানে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত হবেন। হাশরের ময়দানে উপস্থিত সবাই অজুকারী ব্যক্তির দিকে বারবার তাকাতে থাকবে। অজুকারী ব্যক্তির হাত-পা ও মুখমণ্ডল চমকাতে থাকবে। হজরত নোয়াঈম মুজমির রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু হোরায়রা রা:-এর সাথে মসজিদের ছাদে উঠলাম। তিনি অজু করলেন। তারপর বললেন, আমি রাসূল সা:কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামত দিবসে আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় ডাকা হবে যে, অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার ইচ্ছা রাখে সে যেন তা করে নেয়’ (বোখারি : ১৩৮)।

অজুকারীদের অনেকে দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন। যেমনটি হজরত বেলাল রা: পেয়েছিলেন। একবার রাসূল সা: ফজরের নামাজের সময় হজরত বেলাল রা:কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে বেলাল! তুমি ইসলাম গ্রহণের পর থেকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ যে আমল করেছ তার কথা আমাকে বলো! কেননা, জান্নাতে আমি তোমার জুতার আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। হজরত বেলাল রা: বললেন, দিন বা রাতে যখনই আমি অজু করি, তখনই আমি সামর্থ্য (তাহিয়্যাতুল অজু) অনুযায়ী নামাজ পড়ি। এ ছাড়া আর তেমন কিছুই করি না’ (বোখারি : ১০৮৩)।

অজু চেহারার ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে

নুআইম মুজমির (রহ.) বলেন, আমি আবু হুরায়রা (রা.)-এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি অজু করে বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় আহ্বান করা হবে, যে অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৩৬)

অতএব আমাদের উচিত, অজুর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া। প্রিয় নবীজির সুন্নত মোতাবেক অজু করার চেষ্টা করা। কারণ প্রিয় নবীজি কিয়ামতের দিন তাঁর উম্মতদের অজুর অঙ্গগুলোর উজ্জ্বলতা দেখে চিহ্নিত করবেন। তাদের হাউসে কাউসারের পবিত্র পানি দ্বারা আপ্যায়ন করবেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি কবরস্থানে এসে বলেন, তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। হে কবরবাসী মুমিনরা, ইনশাআল্লাহ আমরাও তোমাদের সঙ্গে এসে মিলব। আমার বড় ইচ্ছা হয় আমাদের ভাইদের দেখি। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমরা কি আপনার ভাই নই? তিনি বলেন, তোমরা তো আমার সাহাবা। আর যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তারা আমাদের ভাই। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আপনার উম্মতের মধ্যে যারা এখনো (পৃথিবীতে) আসেনি তাদের আপনি কিভাবে চিনবেন? তিনি বলেন, ‘কেন, যদি কোনো ব্যক্তি সাদা রঙের কপাল ও সাদা রঙের হাত-পাবিশিষ্ট ঘোড়া অনেকগুলো কালো ঘোড়ার মধ্যে মিশে যায় তবে সে কি তার ঘোড়াকে চিনে নিতে পারবে না? তারা বলেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ। তিনি বলেন, তারা (আমার উম্মত) সেদিন এমন অবস্থা আসবে যে অজুর ফলে তাদের মুখমণ্ডল, হাত-পা জ্যোতির্ময় হবে। আর হাউসের পাড়ে আমি হব তাদের অগ্রনায়ক। জেনে রাখো, কিছুসংখ্যক লোককে সেদিন আমার হাউস থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে, যেমনিভাবে বেওয়ারিশ উটকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। আমি তাদের ডাকব, এসো এসো। তখন বলা হবে, ‘এরা আপনার পরে (আপনার দ্বিনকে) পরিবর্তন করে দিয়েছিল।’ তখন আমি বলব, ‘দূর হও, দূর হও’। (মুসলিম, হাদিস : ৪৭২)

অজু অবস্থায় ঘুমানোর ফজিলত

তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। রাত্রিকে করেছি আবরণ। দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়।’ (সুরা নাবা : আয়াত ৯-১১) মানুষ দিনের বেলায় দুনিয়ার যাবতীয় কাজ-কর্মে ব্যস্ত সময় পার করে। রাতে ক্লান্তি ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে বাসায় ফিরে। বিশ্রামের জন্য শয্যাগ্রহণের সুফল ও ফজিলতে রয়েছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ হাদিস। যা তুলে ধরা হলো-

عَنْ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَتَيْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلَاةِ ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الْأَيْمَنِ
হজরত বারা ইবনে আযিব হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছেন, ‘যখন তুমি তোমার শয্যা গ্রহণের ইচ্ছা করবে, তখন সালাতের ন্যায় অজু করে ডান কাত হয়ে শয়ন করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

যে ব্যক্তি পবিত্রাবস্থায় (অজু অবস্থায় ) ঘুমায় তার সাথে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকে। অতঃপর সে ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সাথে সাথেই আল্লাহ্‌র সমীপে ফেরেশতাটি প্রার্থনায় বলে থাকে, হে আল্লাহ্‌! তোমার অমুক বান্দাকে ক্ষমা করে দাও, কেননা সে পবিত্রাবস্থায় ঘুমিয়েছিল।’ (আল ইহসান ফি তাকরিব, সহীহ ইবনে হিব্বান)
সুতরাং মানুষের যখনই শয্যা গ্রহণের প্রয়োজন হবে বা ইচ্ছা পোষণ করবে তখন অজুর সহিত ঘুমালে আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত লাভ হবে।

অজু করার সময় পঠিত দোয়া

অজুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রয়েছে চারটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। যা তুলে ধরা হলো-
ক. শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলে অজু শুরু করা।

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ‎‎

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
অর্থ : পরম করুনাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

খ. অজু করার সময় এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়া-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসি` লি ফি দারি, বারিক লি রিযক্বি। (নাসাঈ)

অর্থ : হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।

গ. অজুর শেষে কালিমা শাহাদাত পড়া- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত)

উচ্চারণ: আশহাদু আল্লাইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।’ (মুসলিম মিশকাত)

ঘ. তারপর এ দোয়াটি পড়া-

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাঝআ’লনি মিনাত তাউয়্যাবিনা ওয়াঝআ’লনি মিনাল মুতাত্বাহহিরিন।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের মধ্যে শামিল করে নিন।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

প্রতিটি মুমিনের উচিত, অজুর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া। অজুর ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথভাবে অজু করা। এখন শীতের মৌসুম, শীতের তীব্রতায় অজুতে যেন কোনো রকম ত্রুটি থেকে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা। আল্লাহ তাআলা অজুর সময় উক্ত দোয়াগুলো পড়ার মাধ্যমে দুনিয়াতে উত্তম রিযিক, মৃত্যুর পূর্বে গোনাহ মাফ এবং আখিরাতে জান্নাত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Image Source: gettyimages.com

আরো পড়ুনঃ বীর্য লেগে কম্বল-তোশক নাপাক হলে যেভাবে পবিত্র করবেন

Share.

Leave A Reply