Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

    What's Hot

    ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরাইল, বন্ধ জেরুজালেমের রাস্তা

    হোলি উৎসবের কারণে ভারতের বহু মসজিদে পিছিয়ে গেল জুমার নামাজ

    রামগন্জের কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল

    Facebook Twitter Instagram
    • Home
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    Login
    The Holy Media
    • Home
    • ইসলামের আহকাম
      1. নামাযের হুকুম
      2. রোজা
      3. হজ
      4. যাকাতের বিধান
      5. পর্দার বিধান
      6. ইসলামে হালাম হারাম
      7. পবিত্রতা
      8. View All

      জামাতে নামাজ পড়ে পুরস্কার পেল ১৫ কিশোর

      January 30, 2023

      কুনুতে নাজেলা কি? দোয়া-বদদোয়ায় তা পড়ার বিধান ও পদ্ধতি

      December 24, 2021

      ফজরের জামাত চলাকালীন অবস্থায় সুন্নত পড়ার বিধান

      December 13, 2021

      প্রিয়নবী সা. যেভাবে কাটাতেন শাবান মাস

      February 3, 2025

      রোজা সম্পর্কিত আমাদের কিছু কমন জিজ্ঞাসা

      March 19, 2023

      তওবার অশ্রুতে সিক্ত হোক পবিত্র রমজানের শেষ রাতগুলো

      April 16, 2022

      মানবজাতিকে যে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে মাহে রমজান

      April 16, 2022

      আজ পবিত্র হজ

      June 15, 2024

      বিদায় হজের ভাষণ : সর্বজনীন মানবাধিকারের ইশতেহার

      June 27, 2023

      আল্লাহ হজের যে প্রতিদান দেবেন

      June 26, 2023

      হজ্জের পর হাজী সাহেবের করণীয়

      July 15, 2022

      ইরানে হিজাব ছাড়া বের হলেই ১০ বছর কারাদণ্ডের বিল পাস

      September 21, 2023

      আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ

      July 4, 2023

      হিজাব পরে কলেজে প্রবেশে বাধা, পদত্যাগ করলেন অধ্যাপিকা

      February 18, 2022

      মানুষ যা পরিধান করে তাই হিজাবঃ আরশাদ মাদানী

      February 16, 2022

      পানের সাথে জর্দা খাওয়া কি হারাম?

      August 29, 2023

      কি কি কারনে গোসল ফরজ হয়? ফরজ গোসলের সর্বোত্তম পদ্ধতি কি?

      January 2, 2022

      অজুর গুরুত্ব ও ফজিলত; অজু করার বিশুদ্ধ নিয়ম ও তারতিব

      December 31, 2021

      বীর্য লেগে কম্বল-তোশক নাপাক হলে যেভাবে পবিত্র করবেন

      December 23, 2021

      প্রিয়নবী সা. যেভাবে কাটাতেন শাবান মাস

      February 3, 2025

      আজ পবিত্র হজ

      June 15, 2024

      ইরানে হিজাব ছাড়া বের হলেই ১০ বছর কারাদণ্ডের বিল পাস

      September 21, 2023

      আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ

      July 4, 2023
    • খোলাফায়ে রাশেদীন
      1. হজরত আবু বকর রাঃ
      2. হজরত উমর রাঃ
      3. হজরত উসমান রাঃ
      4. হজরত আলী রাঃ
      5. View All

      আবু বকর রাঃ কেন উমর রাঃ এর দাড়ি ধরে ধমক দিয়েছিলেন?

      December 10, 2021

      ইসলামের প্রথম খলীফা আবু বকর রাঃ এর প্রথম ভাষণ ও আধুনিক রাষ্ট্রনায়কদের জন্য শিক্ষা

      December 9, 2021

      উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর কিছু বিখ্যাত উপদেশ বাণী

      December 21, 2021

      আবু বকর রাঃ এর ইনতেকালের পর আলী রাঃ এর আবেগময় ভাষণ

      December 20, 2021

      উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহুর কিছু বিখ্যাত উপদেশ বাণী

      December 21, 2021

      আবু বকর রাঃ এর ইনতেকালের পর আলী রাঃ এর আবেগময় ভাষণ

      December 20, 2021

      আবু বকর রাঃ কেন উমর রাঃ এর দাড়ি ধরে ধমক দিয়েছিলেন?

      December 10, 2021

      ইসলামের প্রথম খলীফা আবু বকর রাঃ এর প্রথম ভাষণ ও আধুনিক রাষ্ট্রনায়কদের জন্য শিক্ষা

      December 9, 2021
    • সীরাতে রাসূল সাঃ

      নবিজির প্রিয় খাবারের তালিকা

      December 8, 2023

      খাদ্যসংকট দূর করতে নবীজি সাঃ যে নির্দেশনা দিয়েছেন

      June 26, 2022
    • মুসলমানদের সোনালী শাসন
    • বর্ণাঢ্য জীবনী
    • ভিডিও

      শীগগিরি হবে গাজওয়াতুল হিন্দ, তছনছ হয়ে যাবে হিন্দুত্ববাদী সাম্রাজ্য

      February 16, 2025

      ঈসা আঃ এর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে সিরিয়ার দামেস্ক

      January 3, 2025

      দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার ইতিহাস । TheHolymedia

      February 24, 2023

      পদত্যাগ করলেন মসজিদুল হারামের ৩২ বছর দায়ীত্ব পালন করা খতিব শায়খ শুরাইম

      February 12, 2023

      পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ঙ্কর ১০টি ভূমিকম্প (ভিডিও)

      February 10, 2023
    The Holy Media
    Home » Blog » কেমন ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী
    ফিচার

    কেমন ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী

    কেমন ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী
    কেমন ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী
    Share
    Facebook Twitter Telegram Pinterest Email

    হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মরহুম মহাসচিব, ঢাকা খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসার প্রধান পরিচালক ও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের সভাপতি আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী গত ২৯ নভেম্বর রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে রব্বে কা’বার ডাকে সাড়া দেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। পরলোক গমনের সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

    বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী এ মনীষী ছিলেন বিশিষ্ট আলিমে দ্বীন, তুখোড় বক্তা, শক্তিশালী লেখক, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও অভিজ্ঞ সংগঠক। ইসলামের সেবায় তিনি জীবন উৎসর্গ করেন। ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার ধুরুং গ্রামে তার জন্ম।

    প্রাথমিক জীবনে নাজিরহাট বড় মাদ্রাসায় তিনি কুরআনের হেফজ (মুখস্থ) সম্পন্ন করেন। হেফজ সমাপ্তির পর একই মাদ্রাসায় হেদায়াতুন্নাহু জামাত (মাধ্যমিক) পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। অতঃপর উচ্চতর শিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভর্তি হন  এবং ১৯৭৪ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন।

    তাঁর উল্লেখযোগ্য শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন মুফতি ফয়জুল্লাহ, শাহ আবদুল ওয়াহহাব, আব্দুল আজিজ, আহমাদুল হক, আবুল হাসান, মুহাম্মদ হামেদ, শাহ আহমদ শফী রহঃ প্রমুখ।

    শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর পটিয়া থানাধীন কৈয়গ্রাম মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। উক্ত মাদ্রাসায় এক বৎসর শিক্ষকতার পর বাবুনগর মাদ্রাসায় আহুত হলে সেখানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত হন। বাবুনগর মাদ্রাসায় কয়েক বৎসর অধ্যাপনার পর ঢাকার আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসায় ১৯৮২ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। এসময়ে তার পিতার মৃত্যুবরণের পর তিনি নিজ বাড়িতে চলে যান ও পুনরায় বাবুনগর মাদ্রাসায় যোগদান করেন।

    মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ১৯৭৪ সালে দারুল উলুম হাটহাজারী থেকে দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রি অর্জন শেষে পটিয়া থানাধীন কৈয়গ্রাম মাদরাসা, বাবুনগর মাদরাসা ও ঢাকার আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন।

    ১৯৮৪ সালে তিনি রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদরাসায় দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত শিক্ষাকার্যক্রম চলে আসছে। আমৃত্যু তিনি এই মাদরাসার মহাপরিচালক ও শায়খুল হাদিস হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি দারুল উলুম হাটহাজারীসহ অনেক মাদরাসা পরিচালনা কমিটির (মজলিসে শূরা) সদস্য ছিলেন।

    এ ছাড়াও দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ এবং বিদেশে যুক্তরাজ্যসহ বহু স্থানে মসজিদ ও মাদরাসা স্থাপন করেন। বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও আমেলার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

    বাংলাদেশের খ্যাতনামা আলিম, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক বক্তা মরহুম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ.-এর সাথে তার ছিল গভীর রুহানি সম্পর্ক। দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করার পর মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী বহুদিন খতিবে আযমের সান্নিধ্যে অবস্থান করে শিক্ষা ও দীক্ষা হাসিল করেন। খতিবে আযমও মেধাবী ছাত্র হিসেবে তাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন।

    ১৯৮০ সালে রাজধানীর ছোট কাটরা মসজিদ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে তিনি কাদিয়ানি মতবাদ খণ্ডনের ওপর তথ্যপূর্ণ এক দীর্ঘ আলোচনা করেন। সে বয়ানটিকে মাওলানা জিহাদী বাংলা ভাষায় নথিবদ্ধ করে ‘খাতেমুল মুরসালিন’ নামে পুস্তিকাকারে প্রকাশ করেন। মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ.-এর স্মৃতি, প্রজ্ঞা ও সজ্ঞা উল্লেখপূর্বক ‘তাজকিরায়ে খতিবে আযম’ নামে তিনি একটি গ্রন্থ রচনা করে গেছেন।

    মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ.-এর স্মারকগ্রন্থের জন্য লিখিত এক নিবন্ধে মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, ‘হযরত খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ.-এর অবদান, কামালাত ও যোগ্যতাবলির সবকিছু তুলে ধরার দুঃসাহস করাও আমার মতো বাকশক্তি ও লেখনশক্তিহীনের জন্য পাপের নামান্তর। প্রভুপ্রদত্ত তার সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব ছিল হকপন্থীদের এক বিশেষ আশ্রয়স্থল। উম্মতের জন্য তিনি ছিলেন এক অসাধারণ নিয়ামত। তাই তো বলা হয়, ‘একজন প্রকৃত আলিমের মৃত্যু মানে পুরো পৃথিবীর মৃত্যু!’

    হজরত খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ.কে আল্লাহ পাক অনেক কামালাত তথা যোগ্যতা দান করেন। ছোটকাল থেকেই তিনি ছিলেন তুখোড় মেধাবী ও চরিত্রবান। তার ছাত্রজীবন ছিল অসাধারণ এক স্বর্ণালি জীবন। ছিলেন শিক্ষকদের দোয়া ও মুহাব্বতের পাত্র।

    শিক্ষকদের কথা ও নসিহতগুলো ধারনের ক্ষেত্রে তার অন্তর-মস্তিষ্ক ছিল টেপ রেকর্ডারের মতো। শিক্ষকতা জীবনের পুরোটাই ছিলেন ছাত্র-শিষ্যদের চক্ষুর প্রশান্তি, জ্ঞানের আধার আর অনেক বিষয়ের উৎপত্তিস্থল! ওয়াজ-বক্তৃতায় ছিলেন খতিবে আযম তথা ‘সবচে বড় বক্তা’।

    রাজনীতির ময়দানে ছিলেন নেতাদের নেতা। লেনদেন ও আচার-ব্যবহারে ছিলেন অতুলনীয় সাদা মনের এক দিল খোলা মানুষ। ছিলেন হজরত মুফতি আযম আল্লামা ফয়জুল্লাহ রহ.-এর ইজাজতপ্রাপ্ত চার খান্দানেরই খলিফা। লেখার ক্ষেত্রেও ছিলেন অসাধারণ। চলাফেরায় ছিলেন লৌকিকতাবর্জিত।

    জানতেন সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ছোটর সাথে মেলামেশা করার অতুল্য পদ্ধতি। কোনো ধরনের দুশ্চিন্তাই তার মনোবল কখনো ভাঙতে পারেনি। গরিব ও অসুস্থের খোঁজখবর নিতেন। অহঙ্কার ও আমিত্ব থেকে ছিলেন বহু ঊর্ধে। প্রতি স্তরের যোগ্যদের মূল্যায়ন করতেন।

    সাধারণ বক্তাদের বয়ানও খুব মনোযোগসহকারে শুনতেন এবং কখনো-কখনো এরকম মামুলি বয়ান শুনেই চোখের পানি ছেড়ে দিতেন। প্রত্যেকের প্রশংসায় তার মুখ থাকত সদা সতেজ। পরনিন্দা-পরচর্চা থেকে বজায় রাখতেন যোজন যোজন দূরত্ব। কখনো পারিবারিক আলোচনা হলে বউ-বাচ্চাদেরও প্রশংসা করতেন।

    বড়-ছোট মাদরাসার বার্ষিক সভায় বেশির ভাগ সময়েই হুজুরের দাওয়াত থাকত। বয়ানের শুরুতেই তিনি মাদরাসা ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষের পরিচয় তুলে ধরতেন। আর শ্রোতাদের সামনে মাদরাসার সার্বিক অবস্থা তুলে ধরতেন খুব সুন্দর ও সাবলীলভাবে যাতে মাদরাসার সাথে এলাকার জনসাধারণের একটা আত্মিক সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায়।

    আমন্ত্রিত আলোচকদের মধ্যে যাদের চিনতেন, তাদের যোগ্যতা ও পারঙ্গমতাকে খুব গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতেন এবং তাদের আলোচনা শোনার জন্য শ্রোতাদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন। যখন যে বিষয়ে আলোচনা করতেন, সে বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রাঞ্জল ভাষায় বিশ্লেষণ করতেন। তার আলোচনা শুনে মনে হতো যেন, এ বিষয়ে আর কেউ আলোচনা করতে সক্ষম হবেন না।

    কুরআন কারিমের কোনো আয়াত তিলাওয়াত করে যখন তার তাফসিরের সাথে সামঞ্জস্য বুঝিয়ে দিতেন, তখন মনে হতো, হ্যাঁ, আয়াতের সঠিক তাফসির এটাই। ধর্মের অনেক জটিল মাসয়ালা সহজ করে বুঝিয়ে দিতেন ছোট ছোট পারিবারিক ঘটনার উদ্ধৃতি টেনে। কঠিন থেকে কঠিনতর বিষয়গুলোকে সবার বোধগম্য উদাহরণের মাধ্যমে অতি সহজ করে দিতেন।

    যখন সাহাবায়ে কেরাম রা:-এর যুদ্ধাভিযানের ঘটনা বর্ণনা করতেন তখন মনে হতো যেন তিনি সশরীরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। আপন আলোচনাশক্তির জাদুবলে যুদ্ধক্ষেত্রের কর্মকাণ্ডকে শ্রোতাদের সামনে এমনভাবে তুলে ধরতেন যে, শ্রোতারাও মনে করত, তারা সবকিছু সচক্ষে দেখছেন।

    তিনি সবশ্রেণীর মানুষের যোগ্যতার স্বীকৃতি দিতেন। কখনো বা উপযুক্ত স্থানে তা বয়ানও করতেন। তার কথা ছিল খুবই স্পষ্ট। তার কুরআন তিলাওয়াত ছিল অত্যন্ত শুদ্ধ এবং খুবই হৃদয়গ্রাহী। আলোচনার জন্য যখন মঞ্চে আরোহণ করতেন, ডায়াস থেকে যখন তার নাম ঘোষণা করা হতো, সাথে সাথেই চারদিক থেকে পতঙ্গের মতো মানুষ ছুটে আসত এবং সবাই একাগ্রমনে তার বয়ান শোনার জন্য বসে যেত।

    খোতবা যখন শুরু করতেন, তখন শ্রোতাদের অবস্থা হয়ে যেত ‘তাদের মাথার ওপর পাখি’র মতো! বেশির ভাগ আলিম ও তালিবে ইলমই খাতা-কলম নিয়ে তার বয়ান নোট করে রাখত। আলোচনার আরম্ভ থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত সবাই শান্তভাবে বসে থাকতে ক্লান্তি অনুভব করত না।

    কারো অনুভবও হতো না যে, সময় কোন দিক দিয়ে শেষ হয়ে গেল! রাজনৈতিক মাঠে যখন ভাষণ দিতেন, তখন সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও পুঁজিবাদ-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এমন প্রজ্ঞার সাথে মানুষকে বোঝাতেন যে, যেভাবে উপস্থাপন করাটা সে কালেও কারো সাধ্যের সীমায় ছিল না।

    উল্লিখিত তিন মতবাদের বিপরীতে যখন কুরআন-হাদিসের আলোকে নিজের বিশেষ বক্তৃতাশৈলীর জাদুতে ইসলামী শরিয়ত ব্যবস্থার স্বরূপ তুলে ধরতেন, তখন সাধারণ মানুষের কাছে সবকিছু দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যেত। এ ছাড়াও সারা দেশে তিনি শিক্ষিতমহল ও সাধারণ মানুষের মাঝে বিভিন্ন ওয়াজ-নসিহত ও সভা-সমিতিতে, বয়ান-বক্তৃতায় সমান গ্রহণযোগ্যতা রাখতেন। রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বড় বড় জনসমাবেশে তিনি বক্তৃতা করতেন। তার বয়ানের ধরন ছিল বিস্ময়কর প্রভাবক ও চমৎকার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। হাদিসের ভাষ্যমতে, কিছু বয়ান জাদুময়ী আর কিছু বক্তৃতা সর্বৈব প্রজ্ঞাপূর্ণ’ (ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সম্পাদিত ‘খতিবে আযম স্মারকগ্রন্থ’’)।

    মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী চারটি ভাষা জানতেন : বাংলা, আরবি, ইংরেজি, উর্দু ও ফারসি। তার লেখার হাতও ছিল চমৎকার। উর্দু ভাষায় তার পারঙ্গমতা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। তিনি যে সময় পড়ালেখা করেন তখন শিক্ষার মাধ্যম ছিল উর্র্দু। ফলে উর্দু ভাষায় গদ্য ও পদ্য রচনায় তার ছিল সমান দক্ষতা।

    তিনি সাবলীল ভাষায় কবিতা রচনা করতে পারতেন। তার রচনাবলির মধ্যে রয়েছে আখলাকে রাসূল সা:, উজ্জ্বল নক্ষত্র, কাদিয়ানি ফিতনা, মুসলিম মিল্লাতের অবস্থান, কোরবানির আহকাম, গুলশানে নূর, আসমানি ইলম কি চার দরখসান্দে সিতারে, তাজকিরায়ে খতিবে আযম, শেখ সাদী রহ.-এর উপদেশ ভাণ্ডার, কাদিয়ানের বহুরূপী ভণ্ডনবী, নুকুশে জিন্দেগি ও পান্দে নামায়ে নছির, কওমি মাদরাসা : উদ্দেশ্য পদ্ধতি ফলাফল।

    মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ছিলেন সংগ্রামী ও সাহসী আলিম। বাতিল ও না-হকের মুকাবেলায় সর্বদা ছিলেন সোচ্চার। সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য সবসময় তার প্রস্তুতি থাকত।

    কাদিয়ানিদের মুখোশ উম্মোচন ও তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের ব্যানারে তিনি সারা জীবন আন্দোলন করে গেছেন। এ বিষয়ে তিনি ঢাকায় বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। প্রায় প্রতি বছর ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত খতমে নবুয়ত সম্মেলনে অতিথি হিসেবে যুক্তিনির্ভর বক্তব্য রাখতেন।

    তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের অফিস থেকে হজরত মুহাম্মদ সা: শেষ নবী, তাঁর পরে আর কোনো নবী আসবেন না; এ বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বহু পুস্তক বের করেন। বায়তুল মুকাররমের খতিব ও মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুয়তের সভাপতি মরহুম মাওলানা উবায়দুল হক রহ.-এর পরামর্শে এসব গ্রন্থ সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করেন। কাদিয়ানিদের ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করার ক্ষেত্রে তার অবদান ব্যাপক ও বিশাল।

    ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন মুত্তাকি, পরহেজগার, অনাড়ম্বর, বিনয়ী ও বন্ধুবৎসল। এলোমেলো কথাকে গুছিয়ে বলার যোগ্যতা ছিল তার। আশি ও নব্বইয়ের দশকে বিদগ্ধ ওয়ায়েজ হিসেবে সারা দেশে ছিল তার পরিচিতি ও খ্যাতি। পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওয়াজ ও নসিহতের ময়দান থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।

    আমার সাথে তার ছিল মধুর ও আন্তরিক সম্পর্ক। আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। কলেজে শিক্ষকতা করার সময় জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা গেলে প্রায়ই তার মেহমান হতাম পুরানা পল্টনস্থ খতমে নবুয়ত অফিসে; একবার দু’বার নয়, বহুবার ও বহু বছর। অফিসের কেয়ারটেকার তাসলিম আমার সেবায় নিয়োজিত থাকতেন। এখন সেই অফিস নেই, মাওলানা জিহাদী নেই এবং তাসলিমও নেই।

    আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ.-এর ইন্তেকালের পর মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর যখন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব নির্বাচিত হন, তখন পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত ঘোলাটে। দায়িত্ব নিয়ে তিনি অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। পরবর্তীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তা সামাল দিতে তাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে।

    আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহ.-এর ইন্তেকালে তিনি অসহায় বোধ করেন। হেফাজতের যেসব কেন্দ্রীয় নেতা কারাগারে আটক রয়েছেন তাদের মুক্তির জন্য অসুস্থ শরীর নিয়ে তাকে মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত দৌড়াদৌড়ি ও পরিশ্রম করতে দেখা গেছে। অল্পদিনের ব্যবধানে চার জন প্রথম সারির নেতার ইন্তেকালে হেফাজতের সাংগঠনিক কাঠামোতে বড় ধাক্কা লাগে। এর মধ্যে রয়েছেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী (সভাপতি), আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (সভাপতি), আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (মহাসচিব) ও মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী (মহাসচিব)।

    ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দারুল আরকামের প্রধান পরিচালক শায়খুল হাদিস আল্লামা সাজেদুর রহমান হাফি.। তিনি অত্যন্ত যোগ্য ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। ঠাণ্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন না। দেশজুড়ে রয়েছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। হেফাজতের ভবিষ্যত এখন অনেকটা তার ওপর নির্ভরশীল।

    বায়তুল মুকাররমে অনুষ্ঠিত জানাজার নামাজে বিপুল মানুষের উপস্থিতি মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদীর গ্রহণযোগ্যতার পরিচয় মেলে। দোয়া করি, আল্লাহ তায়ালা তার সব খিদমত কবুল করুন, তার মাগফিরাত করুন, তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন এবং দারাজাত বুলন্দ করে দিন, আমিন।

    সূত্রঃ উইকিপিডিয়া ও অন্যদিগন্ত

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Email
    Previous Articleহিজরি সনের সূচনা ও এর প্রভাব
    Next Article আল্লাহর নিকট মুআজ্জিনের মর্যাদা ও নবিজীর সুপারিশ লাভের সহজ উপায়

    এই ধরনের আরো পোস্ট পড়ুন

    বাধা উপেক্ষা করে আল-আকসায় মুসুল্লিদের ঢল

    শীগগিরি হবে গাজওয়াতুল হিন্দ, তছনছ হয়ে যাবে হিন্দুত্ববাদী সাম্রাজ্য

    মসজিদে হারামে শায়খ সুদাইসের চার দশক

    প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করবেন? অতিরিক্ত খেলে কী ক্ষতি হয়?

    মাত্র সাত মাসে হাফেজ হলো ৭ বছর বয়সী মাইদা

    বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের পুরোধা ‘গরীবের ডাক্তার’ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বণাঢ্য সংক্ষিপ্ত জীবনী

    Add A Comment

    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    হোলি উৎসবের কারণে ভারতের বহু মসজিদে পিছিয়ে গেল জুমার নামাজ

    আগামীকাল শুক্রবার (১৪ মার্চ) ভারতে হোলি উৎসব। আর এই উৎসবের কারণে দেশটির উত্তর প্রদেশ রাজ্যের…

    রামগন্জের কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল

    বাংলাদেশের সাহায্য চায় ভারতের সেভেন সিস্টার্স

    প্রকৃতির অপার বিস্ময় মৌমাছির জীবন চক্র যাতে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা

    রাজনীতিতে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব

    About Us
    About Us

    Fast-growing online news providing positive news & current affairs from Bangladesh and beyond. We publish News at different Perspective.

    Our Picks

    বাংলাদেশের সাহায্য চায় ভারতের সেভেন সিস্টার্স

    প্রকৃতির অপার বিস্ময় মৌমাছির জীবন চক্র যাতে রয়েছে মানুষের জন্য শিক্ষা

    রাজনীতিতে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব

    New Comments
      Facebook Twitter Instagram Pinterest YouTube
      • Home
      • ইসলামের আহকাম
      • ঐতিহাসিক মাদ্রাসা
      • পর্দার বিধান
      © 2025 Alll Rights Reserved TheholyMedia.

      Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

      Sign In or Register

      Welcome Back!

      Login to your account below.

      Lost password?